২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংকিং খাতে চলমান দুর্নীতি ও অর্থপাচার রোধে পদক্ষেপের প্রস্তাব করা হয়নি। উল্টো দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকিং খাতে রাজস্ব আয় থেকে অর্থায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে দুর্নীতিকে ও উৎসাহিত করা হয়েছে।
জানালেন বেসরকারি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাজেটে বিত্তশালী ও ধনীদের তুলনায় মধ্যম ও ক্ষুদ্র আয়ের মানুষের ওপর করের বোঝা বাড়াবে, যা বৈষম্যমূলক। যা রাজস্ব বৃদ্ধির টেকসই পথ হতে পারে না। এছাড়া সীমিত ও স্বল্প আয়ের মানুষের বৈধ পথে সঞ্চয়ে অতিরিক্ত করের বোঝা তাদের বাড়তি আয়ের পথ রুদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকার বৈধতা দেয়ার অসাংবিধানিক সুযোগ করা হয়েছে। মেগা প্রকল্পে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়া হয়নি। এতে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হবে।
তিনি বলেন, ক্রমবর্ধনশীলভাবে আয় ও সম্পদের ওপর রাজস্ব আদায়ে জোর দেয়া হয়নি। রাজস্ব কর্তৃপক্ষ করদাতার প্রসারে ব্যর্থ হয়ে ক্রমাগতভাবে মূসক নির্ভর হয়ে পড়ছে। যা বোঝা মধ্যবিত্ত, নিম্ন আয়ের বা সাধারণ জনগণের ওপর প্রভাব পড়তে বাধ্য। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠবে। ফলে বাড়বে অস্থিতিশীলতা ও ক্ষোভ।
ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকির মুখোমুখি জনগণের জন্য গঠিত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটিএফ) এর জন্য এ বাজেটে মাত্র ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা কমপক্ষে ৪০০ কোটি টাকা হওয়া উচিত। ফলে ইতিমধ্যে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠী আরো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে, যা কখনো কাম্য হতে পারে না। পাশাপাশি সৌর বিদ্যুতের ওপর ১০শতাংশ কর বসানো গ্রহণযোগ্য নয়।
এবারের বাজেটে যেভাবে কালো টাকাকে বৈধতা প্রদানের অসাংবিধানিক, অনৈতিক ও বৈষম্যমূলক সুবিধা অব্যাহত রাখা হয়েছে তার জোর প্রতিবাদ জানিয়ে টিআইবি বলেন, এ সুযোগ বন্ধ করাসহ সব বৈষম্যমূলক প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করতে হবে। সাধারণ মানুষের ওপর ঢালাওভাবে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বোঝা না চাপিয়ে রাজস্ব আয় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সঙ্গে জনকল্যাণে ব্যবহারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
এমসি/জেএইচ